মায়াবীনি মায়া এক অদ্ভুত ভালোবাসার গল্প
নামটার মধ্যেই যেন এক ধরনের মায়া লুকিয়ে আছে। সে যেমন সুন্দর, তেমনই রহস্যে ঘেরা। তার হাসিতে কার না মন হারায়? কিন্তু এই হাসির আড়ালে লুকিয়ে আছে এক গভীর বেদনা, এক অনন্য মায়া- যা কাউকে কাছে আসতে দেয় না, আবার দূরে যেতেও দেয় না।
🔸 প্রথম দেখা
শীতের এক সন্ধ্যায় পার্কের বেঞ্চে বসে ছিলাম। পাতাঝরা দিন, হালকা কুয়াশা আর ঠাণ্ডা হাওয়া- মনে হচ্ছিল প্রকৃতি যেন নিজের মায়া দিয়ে সবকিছু মুড়িয়ে দিয়েছে! হঠাৎ চোখে পড়ল এক ঝলক লাল শাড়ি। মায়াবীনি দাঁড়িয়ে আছে ওই গাছের নিচে, তার হাতে এক গুচ্ছ শিউলি ফুল। তার দিকে তাকাতেই সে হাসল- সেই হাসি যেন মন্ত্রমুগ্ধ করে দিল আমাকে।
"ফুলগুলো সুন্দর, না?" সে জিজ্ঞেস করল।
"হ্যাঁ, খুব... কিন্তু তোমার হাসিটা আরও সুন্দর," উত্তর দিলাম আমি।
মায়াবীনি আবার হাসল, কিন্তু তার চোখে যেন একটা কষ্ট লুকিয়ে ছিল।
▪️ মায়ার জাল ▪️
দিন যায়, মায়াবীনির সাথে আমার কথোপকথন বাড়ে। সে অনেক কিছু বলে, কিন্তু তার জীবনের গভীর কথাগুলো এড়িয়ে যায়। কখনো কখনো মনে হয়, সে যেন শুধু একটা ছায়া- ধরা যায় না, কিন্তু অনুভব করা যায়।
একদিন জিজ্ঞেস করলাম, "মায়াবীনি, তুমি কি কখনো কাউকে ভালোবেসেছো?"
সে একটু থেমে বলল, "ভালোবাসা কি জিনিস? যে জিনিস ধরা যায় না, শুধু অনুভব করা যায়, তাকে কিভাবে বিশ্বাস করব?"
তার কথায় ব্যথা পেলাম- বুঝলাম, মায়াবীনি কাউকে বিশ্বাস করে না, কারণ তার নিজের জীবনেই হয়তো বিশ্বাসঘাতকতা আছে।
🔸 মায়ার শেষ 🔸
একদিন হঠাৎ করেই মায়াবীনি চলে গেল। কোন চিহ্ন নেই, কোন বার্তা নেই- শুধু রেখে গেল একটা চিরকুট:
আমি মায়া, আমি ছায়া,
আমি সেই মানুষ যে কখনো কারো হতে পারে না।
তুমি আমাকে ভুলে যেও না,
কিন্তু খুঁজতেও আসিও না...
মায়াবীনি চলে গেল, কিন্তু তার মায়া থেকে গেল আমার মনে। কখনো কখনো শিউলি ফুলের গন্ধে মনে পড়ে সেই লাল শাড়ির মেয়েটির কথা, যে ভালোবাসতে চেয়েও পারেনি, যে কাছে এসেও দূরে থাকতে বাধ্য হয়েছিল।
মায়াবীনির মায়া হয়তো সত্যি নয়, কিন্তু এর বেদনা সত্যি- আর এই বেদনাই তাকে করে তোলে চিরস্মরণীয়।