আবেগের বশীভূত হয়ে ভালোবাসার জন্য জীবনটা শেষ করে দেয়ার অর্থ- ভালোবাসার মানুষের পাশাপাশি আপনজনদেরকে সারাজীবনের জন্য হারানো, সেইসঙ্গে ভালোবাসার মানুষকে অপরাধী বানিয়ে চলে যাওয়া।
প্রেমে ব্যর্থ হয়ে নিজেকে বিসর্জন দেয়ার নাম জীবন নয়, তার জন্য লড়াই করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার নাম জীবন।
ভালোবাসা মানে সম্পর্ক, মানুষে মানুষে বিশ্বাসের ভিত্তি। ভালোবাসার অনেক রূপ,
যেমন ভাই-বোনের ভালোবাসা, বাবা-মায়ের ভালোবাসা।
পরিবারে একটা পশুর প্রতিও ভালোবাসা হতে পারে।
যেমন অনেকে কুকুর পোষে, বিড়াল পোষে, অ্যাকুরিয়ামে মাছ রাখে, পাখিকে কথা বলতে শেখায়।
এ সবকিছুই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
কেউ কেউ ভালোবাসা থেকে গাছ লাগায়, গাছের পরিচর্যা করে। মানুষের প্রতি গাছের ভালোবাসা আছে কিনা জানি না, হয়তো আছে।
একটার পাশে গিয়ে তুমি পরিচর্যা করছ, খোঁজ নিচ্ছ দেখবে সেটি তাড়াতাড়ি বড় হয়ে উঠছে।
অন্যটির কোনো খোঁজ নাওনি,
তাই সে বেড়ে উঠছে না।
এটা কিন্তু পরীক্ষিত, এর থেকেই বোঝা যায় গাছেরও অনুভূতি আছে।
ভালোবাসা শুধু নর-নারীর প্রেমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের মধ্যেই ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে।
একজন রাজনীতিবিদকে মানুষ ভালোবাসে।
তাকে হয়তো সামনাসামনি কোনোদিন দেখেওনি। তবুও ভালোবাসে। কেন? শ্রদ্ধাবোধ থেকে!
একেকজনের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ তো একেক রকম। কারওটা সফট।
কারও বেলায় খুবই অ্যাংরি।
কারওটা কখনও কখনও স্বেচ্ছাচারিতার পর্যায়েও পড়ে। সে অধিকার খাটায়।
ভালোবাসার ঘনত্ব বেশি হলেই সেটাকে প্রেম বলা যায়। উদাহরণ দিয়ে বলি।
একটি মেয়েকে আমার ভালো লাগে, তাকে ভালোবাসি। এই অনুভূতি যখন গাঢ় হয় তখন সেটাকে প্রেম বলা যেতে পারে।
তুমি যদি ভালবাসো মন থেকে যেখানে থাকেনা দৈহিক চাহিদা প্রথম শর্ত, যেখানে ভালবাসার ভবিষ্যত নির্ভর করে না লাভ ক্ষতির হিসেবের উপর সেখানে ভালবাসা কোন ভাবেই শুধু সময়ের উপর নির্ভর করতে পারেনা।মিথ্যে সার্থে ভরা তিন বছরের ভালবাসাও অর্থহীন তিন দিনের সত্যিকার ভালবাসার কাছে।
ভালবাসা ভালবাসাই এবং এর অনুভুতি সবসময়ের জন্য একই । সময় এখানে একমাএ অথবা প্রধান কারন নয়।
বাস্তবতার বেড়াজালে যখন ভালবাসার মানুষ দুজন একে অন্য থেকে হয় বিচ্ছিন্ন, যখন মনের হাজার ইচ্ছাও দুটি মানুষকে রাখতে পারেনা কাছাকাছি তখন কিন্তু তাদের মধ্যে তীব্র বেদনার তৈরী হয়।
কিন্তু এই বেদনাটাকে যদি আমরা বিশ্লেষন করি তাহলে কি দেখতে পাই?
দেখতে পাই যে তারা একজন আর একজনকে খুব মিস করতেছে, মিস করতেছে তাদের হাসি,কান্না,খুনসুটি।
হয়ত তারা চোখও মোছে মনের মানুষের কথা ভেবে। আবার তাদের নির্মল আনন্দের উপলক্ষ্য এই কষ্টময় বেদনাটুকুই।
তারা এটা ভেবে খুশি হয় যে তার ভালবাসার মানুষটি তাকে কত মিস করতেছে, তাকে নিয়ে কত ভাবতেছে, তার জন্য কথা জমিয়ে রাখতেছে।তারা ভেবে খুবই পুলকিত হয় যে তারা একজন আরএকজনকে কত ভালবাসে।সত্যি বেদনাও মানুষকে আনন্দ দিতে পারে, দিতে পারে মনের মানুষকে নিয়ে গর্ব করার সুখময় সুযোগ।আর এই আনন্দই দুটি মানুষকে করে আরো রঙ্গিন, ভালবাসা করে আরো পরিণত।
খুব তুচ্ছ কারনে যে কারো প্রতি ভালো লাগা তৈরি হতে পারে। কোন মেয়ের ভূবন ভুলানো হাসি দেখে এক মুহুর্তেই তাকে ভালো লেগে যেতে পারে।
কিংবা রাস্তায় চলতে ফিরতে সুন্দরী কোন মেয়েকে এক পলক দেখেই যে কোন ছেলের হার্টবিট মিস হয়ে যেতে পারে। অথবা কোন ছেলে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলে, কিংবা গিটার বাজিয়ে, গান শুনিয়ে কোন মেয়েকে মুগ্ধ করে দিতে পারে। আর তাতে ছেলেটার প্রতি মেয়েটার এক ধরনের অনুভূতি তৈরি হয়।
এই অনুভূতিগুলোকে আসলে ভালো লাগা বলে। ভালোবাসা নয়।
ভালোবাসা এত সহজে হয়না। একজন মানুষের জন্য ভালোবাসা তৈরী হয় খুব ধীরে ধীরে। চাইলেই যে কাউকে ভালোবাসা যায়না। চাইলেই যে কাউকে ভালোবাসি বলা যায়না। চাইলেই সব ছেড়ে ছুঁড়ে কেউ একজনের হাত ধরে দূরে কোথাও পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করেনা।
চাইলেই কেউ একজনের জন্য পুরো পৃথিবীর বিপক্ষে চলে যাওয়া যায়না।
সেই কেউ একজন টা খুব স্পেশাল একজন মানুষ হয়। যাকে শুধু ভালোবাসাই যায়।
চোখ বন্ধ করে যার উপর নির্ভর করা যায়।
যে অনুভূতি খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হয় তা হারিয়েও যায় খুব দ্রুত। অনুভূতি হারিয়ে গেলে সে মানুষটাও কিছু না বলে চুপি চুপি আপনার জীবন থেকে হারিয়ে যায়।
তখন বুঝতে হবে আপনার প্রতি তার কখনো ভালোবাসা ছিল না। যা ছিল তার পুরোটাই ছিল ভালো লাগা।
কারন যাকে ভালোবাসা যায় হুট করে রাস্তার মাঝখানে তার হাত ছেড়ে দিয়ে দূরে চলে যাওয়া যায়না। বেশিরভাগ মানুষই ভালো লাগা এবং ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য বের করতে পারেনা।
আর তাইতো অভিমানী মেয়েটা আজো প্রতীক্ষা করে। নির্ঘুম রাতে বিছানায় শুয়ে ছটফট করে।
আর তাইতো বোকা ছেলেটা অক্সিজেনের বদলে বুক ভরে নিকোটিন নেয়। রাত গভীর হলে মেয়েটার নাম্বার বন্ধ জেনেও সে নাম্বারে বার বার ফোন করে অস্থির সময় কাটায় ।।
Tags:
Heartline